সিলেটের আলো ডেস্কঃ সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছাত্রলীগের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন দায়িত্বরত চিকিৎসক, সিকিউরিটি গার্ড ও লিফটম্যান। এসময় হাসপাতাল এলাকা জুড়ে উদ্ভূত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ছাত্রলীগ কর্মীদের এমন উদ্যত আচরণের প্রতিবাদে চিকিৎসকরা হাসপাতালের বাইরে এসে কর্মবিরতি পালন করে। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে রাত সাড়ে ১০ টার দিকে তারা কাজে যোগ দেয়।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ছাত্রলীগ কর্মীদের হাতে চিকিৎসক, সিকিউরিটি গার্ড ও লিফটম্যানের এমন লাঞ্ছনার ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বিকেলে ছাত্রলীগ নেতা সারোয়ার চৌধুরী তার ১৪/১৫ জন সহকর্মীসহ অ্যাপেন্ডিসাইটিসের এক রোগীকে নিয়ে উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান। হাসপাতালে প্রবেশের সময় দায়িত্বরত সিকিউরিটি গার্ড ও লিফটম্যানকেও লাঞ্ছিত করেন তারা। পরে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলে এপেন্ডিসাইটিসের বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ায় দায়িত্বরত মহিলা ইন্টার্ন চিকিৎসক সবাইকে একটু ধৈর্য ধরার পরামর্শ দিয়ে রোগীকে সিনিয়র চিকিৎসক দেখবেন বলে জানান।

ছাত্রলীগ নেতা সারোয়ার হোসেন।
এ সময় সারোয়ার চৌধুরী নিজেকে জেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি পরিচয় দিয়ে তিনিসহ সবাই ইন্টার্ন চিকিৎসকের সাথে উদ্যত আচরণ ও গালিগালাজ করেন। এতে ভয়ে লজ্জায় কেঁদে ফেলেন ওই ইন্টার্ন চিকিৎসক। ঘটনার একপর্যায়ে সারোয়ার চৌধুরী ছুরি নিয়েও ইন্টার্ন চিকিৎসককে ধাওয়া করেন। পরে হাসপাতালে দায়িত্বরতদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
এ ঘটনার পর হাসপাতালের দুজন চিকিৎসককে মুঠোফোনে প্রাণনাশের হুমকিও দেয়া হয়।
এ ব্যপারে ছাত্রলীগ নেতা সারোয়ার চৌধুরীর সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, এখানে চিকিৎসকদের সাথে কিছুটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। আমার বন্ধুর শরীর বেশি খারাপ থাকার কারণে আমরা কিছুটা উত্তেজিত হয়ে পড়েছিলাম। যা ঠিক হয়নি। তবে এ ভুল বোঝাবুঝির সমাধান হয়ে যাবে।
এদিকে ছাত্রলীগ কর্মীদের হাতে চিকিৎসকসহ স্টাফদের এমন লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে সন্ধ্যার পর থেকে কর্মবিরতিতে নামেন হাসপাতালের চিকিৎসকরা। রাত সাড়ে ১০ টার দিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে তারা কাজে যোগ দেয়। কর্মবিরতি পালনকালে তারা এ ন্যক্কারজনক ঘটনার সাথে জড়িতদের শাস্তি দাবি করেন।
এ ব্যাপারে উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. ফেরদৌস হোসেন বলেন, তারা সন্ত্রাসীর মতো আচরণ করেছে। আমরা তো তা করতে পারি না। চিকিৎসা সেবাও বন্ধ রাখতে পারি না। এটা মেনে নিয়েই আমাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে।
ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উক্ত লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনাটি কেউ ভিডিও ধারণ করলে তা ফেইসবুকে পোষ্ট করার সাথে সাথে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায় ।