April 20, 2025, 12:07 am

বিজ্ঞপ্তি :::
Welcome To Our Website...
শিরোনাম ::
সিলেটে বাংলানিউজইউএসডটকমের বার্ষিক ইফতার ও দোয়া মাহফিল সম্পন্ন কুলাউড়াপৌর শ্রমিক দলের ইফতার মাহফিল ইসলাম ধর্ম গ্রহণকারী তিন পরিবার পেল তারেক রহমানের ঈদ উপহার ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপালের দায়িত্ব পেলেন অধ্যাপক ফেরদৌসী সুলতানা দক্ষিণ সুরমায় আইন-শৃংখলা কমিটির সভা সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয়ের কারণে ইদানিং আমাদের সমাজে নানামুখী অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে — ইউএনও ঊর্মি রায় অপরাধ দমনে শ্রেষ্ঠ হলেন সিলেটের বন্দর পুলিশ ফাঁড়ির আইসি মো: ইবাদুল্লাহ বালাগঞ্জে ধান চুরিতে বাঁধা দেয়ার হামলা, থানায় মামলা সিলেট -রাজশাহী কালেকশনে কোটি কোটি টাকার হেরোইন ব্যবসা মাল বহন করছে নারীরা সিলেটে সাবেক এমপি মানিকের পিএস এর ভাই রজব আলী গ্রেফতার সিলেটবাসী পেল মেট্রোপলিটন কারাগার
কারা আসছেন বিশ্বনাথ উপজেলা জাতীয় পার্টির নেতৃত্বে?

কারা আসছেন বিশ্বনাথ উপজেলা জাতীয় পার্টির নেতৃত্বে?

মো. আবুল কাশেম,বিশ্বনাথ প্রতিনিধি : দীর্ঘদিন ধরে নেই বিশ্বনাথ উপজেলা জাতীয় পার্টির কমিটি। তবে শীঘ্রই কমিটি ষোষণা করা হতে পারে। ইতিমধ্যে কমিটি গঠনের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর উপজেলা জাপার কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। আর ওই সম্মেলনে জাপার কমিটি ঘোষণা হতে পারে বলে দলের একাধিক নেতা জানিয়েছেন। তবে পূর্নাঙ্গ কমিটি না হয়ে আহবায়ক কমিটি গঠিত হবে বলে দলীয় সূত্রে জানাগেছে।

কে হচ্ছেন উপজেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক, আর কারা থাকছেন ওই কমিটিতে এ নিয়ে দলের ভিতরে ও বাহিরে চলছে আলোচনা সমালোচনা। নেতৃত্ব পেতে মাঠ পর্যায়ে নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ে জাপার শীর্ষ নেতাদের কাছেও নিজেদের অবস্থান তুলে ধরতে সচেষ্ট পদপ্রাপ্তি নেতারা।

দীর্ঘদিন ধরে উপজেলা জাতীয় পার্টির কমিটি বিহীন অতিবাহিত হলেও কমিটি ঘোষণা না হওয়া হতাশায় ছিলেন জাপা নেতাকর্মীরা। হতাশ হয়ে পড়েছিলেন পদ-প্রত্যাশী নেতারা। এ নিয়ে দলের ভিতর ও বাহিরে চলছিল নানা আলোচনা-সমালোচনা। অবশেষে চলিত মাসের শেষের দিকে উপজেলা জাপার কমিটি ঘোষনা হবে এমন খবরে দলীয় নেতাকর্মীর মধ্যে প্রাণচঞ্চলতা ফিরে এসেছে। তবে জাপার কমিটি ঘোষনা হলে কারা আসছে নেতৃত্বে? এনিয়ে চলছে উপজেলা জাপার নেতাকর্মীদের ব্যাপক আলাপ-আলোচনা।

নতুন কমিটির আহবায়ক পদে আলোচনায় রয়েছেন উপজেলা জাপার সাবেক সভাপতি এসএম আরশ আলী বাবলু, সাবেক ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক সিতাব আলী, যুগ্ম আহবায়ক এমএ রব, মনোহর আলী, বিশ্বনাথ ইউনিয়ন জাপার আহবায়ক জয়নাল আহমদ ও জাপা নেতা সাইদুর রহমান। কমিটির আহবায়ক হতে কেউ কেউ সিনিয়র নেতাদের কাছে তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন। রাত-দিন রাজপথে কর্মীদের নিয়ে চালিয়ে যাচ্ছেন কার্যক্রম। কিন্তু তারপরেও দলকে সংগঠিত করতে তাদের মধ্যে দলের জন্য কে কতটা সক্রিয় ও নিষক্রীয় রয়েছেন এ নিয়ে চলছে নানা হিসাব-নিকাশ। এছাড়া আলোচনায় রয়েছেন সিলেট জেলা পরিষদের নব-নির্বাচিত সদস্য সহল আর রাজী চৌধুরীও। যদিও তিনি ইতিমধ্যে দলের কোন দায়িত্বে ছিলেন না, তবে নেতাকর্মীদের সংগঠিত করতে ও দলেও বিভিন্ন কর্মসূচী বাস্তবায়নে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তাই দলকে সু-সংগঠিত করতে সার্বিক দিক বিবেচনা করে শেষ পর্যন্ত সহল আর রাজী চৌধুরীকে আহবায়কের দায়িত্ব প্রদান করা হতে পারে বলে এমনটাই দলীয় একটি সূত্রে জানা গেছে। তাছাড়া সিলেট-২ আসনের সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির হওয়ায় এবং আগামী নির্বাচনকে সামনের রেখে এই আসনের উপজেলা জাতীয় পার্টির কমিটিগুলোকে গুরুত্বের সাথে দেখছেন দলের কেন্দ্রীয় নেতারাও।

এদিকে, বিশ্বনাথ উপজেলা জাতীয় পার্টির তৃণমূলের অনেক নেতাকর্মী সহল আল রাজী চৌধুরীকে আহবায়ক করার দাবি জানিয়ে বলেন, দলকে চাঙ্গা করতে নতুন নেতৃত্বের প্রয়োজন। জাতীয় পার্টির বিভিন্ন কর্মসূচী বাস্তবায়নে রাজী চৌধুরী ভূমিকা রেখেছেন। তাই তাকে নেতৃত্ব দিলে বিশ্বনাথে জাতীয় পার্টির আরো সু-সংগঠিত হবে।

দলীয় ও বিভিন্ন সূত্রে জানাগেছে, ২০১৫ সালের ২৪ মার্চ উপজেলা জাপা নেতা আবু বক্কর সিদ্দিকীকে আহবায়ক ও সিতাব আলীকে যুগ্ম আহবায়ক করে ১০৫ সদস্য বিশিষ্ট উপজেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি গঠনের পর বিশ্বনাথ জাপা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব, সিলেট-২ আসনের সাংসদ ইয়াহইয়া চৌধুরী এহিয়া ও সিলেট জেলা জাতীয় পার্টির সাবেক আহবায়ক আবদুল্লাহ সিদ্দিকীর মধ্যে দন্ধের সৃষ্টি হয়। ফলে বিশ্বনাথে জাতীয় পার্টিও দুটি বলয়ের সৃষ্টি হয়। এমপি এহিয়া গ্রুপের নেতৃত্ব দেন জাপা নেতা সিতাব আলী ও আবদুল্লাহ সিদ্দিকী গ্রুপের নেতৃত্ব দেন আরশ আলী বাবলু। এভাবে চলে উপজেলা জাপার কার্যক্রম। এরপর গত বছরের ৪ সেপ্টেবর উপজেলা জাতীয় পার্টির দু’গ্রুপের বিরোধ নিস্পত্তি হয়। ফলে দলীয় গ্রুপিং ভেঙে এক হয়ে যায় জাতীয় পার্টি। ওই দিন উভয় গ্রুপে নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন জেলা জাতীয় পার্টির সাবেক আহবায়ক আব্দুল্লাহ সিদ্দিকী। বৈঠকে তিনি নেতৃবৃন্দের মতামতের ভিত্ত্বিতে উপজেলা জাতীয় পার্টির উভয় কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন। এরপর থেকে কমিটি বিহীন হয়ে পড়ে বিশ্বনাথ উপজেলা জাতীয় পার্টি। তবে বর্তমানে দলে কোন গ্রুপিং নেই।

১৯৯১ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে সিলেট-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন জাতীয় পার্টি মখসুদ ইবনে আজিজ লামা। কিন্তু এরপর আরো তিনটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও সিলেট-২ আসনে ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয়নি জাতীয় পার্টির। আওয়ামী লীগ কিংবা বিএনপির প্রার্থীরাই এ আসনে একাধিক সাংসদ নির্বাচিত হলে চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া উপায় ছিল না জাতীয় পার্টির। এরই প্রেক্ষাপটে ধীরে ধীরে স্থবির হতে থাকে বিশ্বনাথ জাতীয় পার্টির কার্যক্রম। একপর্যায়ে নিখোঁজ হয়ে যায় বিশ্বনাথ জাতীয় পার্টি! বিশ্বনাথের রাজনীতির মাঠে আ’লীগ-বিএনপি উত্তাপ ছড়িয়ে গেলেও মিছিল-মিটিং, সভা-সমাবেশ কোনো ধরনের রাজনৈতিক কর্মকান্ডে বিশ্বনাথ জাতীয় পার্টি কোনো অংশগ্রহণ দেখা যায়নি।

২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মহাজোট সরকারের সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে সিলেট-২ আসন (বিশ্বনাথ-বালাগঞ্জ ও ওসমানীনগর) জাতীয় পার্টি প্রার্থী মনোয়ন পেয়ে এ আসনে জয়লাভ করেন ইয়াইয়াহই চৌধুরী এহিয়া। ফলে আবারো জেগে উঠেন ঝিমিয়ে পড়েছেন দলীয় নেতাকর্মীরা। দলীয় এমপি পেয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে আসে। অন্যান্য সময়ের চেয়ে এখন জাতীয় পার্টি অনেকটাই শক্তিশালী। কিন্তু বর্তমানে উপজেলা জাতীয় পার্টির কমিটি না থাকায় ঝিমিয়ে পড়ছেন দলীয় নেতাকর্মীরা। পদবিহীন হয়ে পড়েন জাপার নেতারা। তৃণমূল নেতাকর্মীরা মনে করছেন নেতাকর্মীদের চাঙ্গা রাখতে এবং আগামী সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীকে আবারো বিজয়ী করতে উপজেলা জাতীয় পার্টির কমিটি গঠন খুবই জরুরী। প্রয়োজন সঠিক নেতৃত্ব। তাই দলীয় কর্মকান্ড, সৎ ও যোগ্যতা দেখে দলীয় দায়িত্ব প্রদানের জন্য উর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দের প্রতি আহবান জানান তৃণমূল নেতাকর্মীরা।

এব্যাপারে উপজেলা জাতীয় পার্টির সাবেক ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক সিতার আলী বলেন, দলের কমিটি না থাকায় কিছুটা ঝিমিয়ে পড়েছেন নেতাকর্মীরা। কমিটি হলে দল প্রাণ ফিরে পাবে। ত্যাগী নেতাদের দিয়ে কমিটি ঘোষনা দাবি জানান তিনি।

উপজেলা জাপার সাবেক সভাপতি এসএম আরশ আলী বাবলু বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে জাপার রাজনীতি সঙ্গে জড়িত। ইতিমধ্যে উপজেলা জাপার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছি। আশাকরি তৃণমূল নেতাকর্মীর মতামতের ভিত্তিতেই ত্যাগী নেতাদের দিয়েই কমিটি গঠিত হবে।

সিলেটে জেলা পরিষদের সদস্য জাপা নেতা সহল আল রাজী চৌধুরী বলেন, আমি ২০০৪ সাল থেকে জাতীয় পার্টির রাজনীনিতির সঙ্গের সড়িত। বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আমি লাঙ্গল প্রতি নিয়ে অংশগ্রহন করি। এরপর জাতীয় পার্টির মনোনিত প্রার্থী হিসেবে জেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহন করে বিজয়ী হই। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান আলহাজ্ব হোসেইন মোহাম্মদ এরশাদ, ভাইস চেয়ারম্যান বেগম রওশন এরশাদ ও মহাসচিব জিএম কাদের সঙ্গে পারিবারিকভাবে আমার আত্মার সম্পর্ক রয়েছে। আমি যদিও দলের কোন দায়িত্বে নই, তবুও শুধু বিশ্বনাথই নয়, বালাগঞ্জ ও ওসমানীনগরে জাতীয় পার্টির মিছিল, মিটিং’সহ বিভিন্ন কর্মসূচী বাস্তাবায়নে কাজ করেছি। আমি দলীয় পদ পদবি পেতে আগ্রহী নই, তবে যদি দলের স্বার্থে আমাকে কোন দায়িত্ব প্রদান করা হয় তাহলে আমি তা পালন করবো।

জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও সিলেট-২ আসনের সংসদ সদস্য ইয়াহইয়া চৌধুরী এহিয়া বলেন, দলের তৃণমূল নেতাকর্মীদের মতামতের ভিত্তিতেই কমিটি গঠন করা হবে।


Comments are closed.




© All rights reserved © sylheteralo24.com
sylheteralo24.com