January 23, 2025, 8:39 am

বিজ্ঞপ্তি :::
Welcome To Our Website...
শিরোনাম ::
সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত কমিটিকে দক্ষিণ সুরমা উপজেলা প্রেসক্লাবের অভিনন্দন আকাশ চৌধুরী সম্পাদিত ‘বিজয় চিরন্তন’বেরিয়েছে ওসমানী হাসপাতালের নার্স আছমা আলহারামাইন থেকে বহিস্কার দক্ষিণ সুরমা উপজেলা প্রেসক্লাবে ব্যারিষ্টার এম এ সালামের মতবিনিময় সুনামগঞ্জের গামাইরতলা সীমান্তে ভুয়া পুলিশ সহযোগী সহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর খাঁচাতে জনগনের কাছে তথ্য অধিকার আইন সম্পর্কে সঠিক ধারনা দিতে হবে: সিলেটে তথ্য সচিব সিলেটের যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরে উপ-পরিচালক শামীম “”বিদায় বেলায় ফুলেল শুভেচ্ছা সংবর্ধনা আর ভালোবাসা সিক্ত যিনি সাংবাদিক চঞ্চল মাহমুদ ফুললের সুস্থতা কামনায় দক্ষিণ সুরমা উপজেলা প্রেসক্লাবের দোয়া মাহফিল শ্রেষ্ঠ যুব সংগঠক পুরস্কার পেলেন দক্ষ সংগঠক ও অভিনয়শিল্পী কামাল জৈন্তাপুরে বিভিন্ন কর্মকর্তা ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সাথে জেলা প্রশাসকের মতবিনিময়
গানের আসর বসিয়ে মাদকসেবীদের প্রমোদ দেয়া ছিল শ্যামলী বসাকের নিত্যদিনের কাজ

গানের আসর বসিয়ে মাদকসেবীদের প্রমোদ দেয়া ছিল শ্যামলী বসাকের নিত্যদিনের কাজ

সিলেটের আলোঃঃ সিলেট শহরতলির শাহপরান এলাকার শাহপরান উপশহর আবাসিক এলাকার বাসিন্দা শ্যামলী বসাক। ফুটবল খেলেন। গান গেয়ে বেড়ান বিভিন্ন অনুষ্ঠানে। মার্শাল আর্টে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। নেপথ্যে বের হয়ে এসেছে নতুন এক পেশার নাম। এই পেশা হচ্ছে মাদক ব্যবসা। মা মাদক সম্রাজ্ঞি সুগা বসাকের হাত ধরেই মূলত তিনি এ পেশায় এসেছেন। এই পেশাকে টিকিয়ে রাখতে শ্যামলী বসাক মারপিটের ওস্তাদ হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছেন। অনুসন্ধানে বের হয়ে এসেছে শ্যামলী বসাকের অন্ধকার জীবনের কথা।

সিলেট শহরতলির খাদিম চা বাগান এলাকায় বসবাস করতেন শ্যামলী বসাকের মা ও বাবা। তারা ছিল চা বাগানের অনিয়মিত শ্রমিক। কিন্তু শ্যামলী বসাকের মা ও বাবার মাদক ব্যবসাসহ নানান অপকর্মের কারণে শ্রমিকরা অতিষ্ঠ ছিলেন। চা বাগান কর্তৃপক্ষও ছিলেন বিপাকে। সীমাহিন যন্ত্রণার কারণে চা শ্রমিক ও বাগান কর্তৃপক্ষ তাদেরকে ২০ বছর আগে বাগান থেকে বিতাড়িত করেন। এর পর তারা আস্তানা বাধেন শাহপরান আবাসিক এলাকার ৩ (৪) নং রোডে।

এখানে আসার পর শ্যামলীর জন্ম হয়। জন্মের পর থেকে আবাসিক এলাকায় মা ও বাবার মাদক ব্যবসা এবং মাদক সেবনের চিত্র দেখে আসছেন। শৈশব থেকেই শ্যামলী বসাক অনেকটা দু:সাহসী ছিলেন। তাই তার মা সুগা রানী বসাক তাকে সংসারের (মাদক ব্যবসার) অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেয়।

পরিকল্পনা অনুযায়ী তাকে প্রথমে ফুটবল খেলায় পারদর্শী করে তোলেন। ফুটবল খেলায় পারদর্শী হয়ে ক্রীড়া অঙ্গণের মূল স্রোতের সঙ্গে মিশে যায় শ্যামলী। সেই সঙ্গে গানের তালিম নিয়ে একজন শিল্পী হিসেবেও নিজেকে প্রকাশ ঘটায় শ্যামলী। মার্শাল আর্টের প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজকে অপ্রতিদ্বন্ধী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে। কিন্তু এসবই হচ্ছিল মা সুগা রানীর মাদক ব্যবসাকে নিরাপদ রাখার জন্যে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফুটবল খেলা, গান ও মার্শাল আর্টের প্রশিক্ষণ-এসবই ব্যবহার করা হতো মাদক ব্যবসাকে নিরাপদ রাখতে। সুগা রানীর মাদক ব্যবসা ও চাঁদাবাজি নিয়ে কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে চরমভাবে লাঞ্ছিত হতে হয়েছে শ্যামলী বসাকের হাতে। মার্শাল আর্টের কলা কৌশল ব্যবহার করা হয়েছে প্রতিবাদকারীর উপর। শ্যামলীর বসাকের মার্শাল আর্টের একশনের কারণে প্রতিবাদীরা পিছু হটতে বাধ্য হয়েছেন। গান আসর বসিয়ে মাদকসেবীদের প্রমোদ দেয়া ছিল তার নিত্যদিনের কাজ। ফুটবল খেলার মাঠে গিয়ে নিজকে ‘ভালো মানুষ‘ মানুষ হিসেবে উপস্থাপন করেছেন।

স্থানীয়রা জানান, শ্যামলী বসাকের ওইসব কর্মকান্ডে উপশহরের বাসিন্দারা ছিলেন অনেকটা আতঙ্কিত। বিপথগামী শ্যামলীকে নিয়ে অনেকেই ভাবতে থাকেন। কেউ কেউ শ্যামলী বসাককে কাউন্সিলিং করার চেষ্টা করেছেন। কাউন্সিলিংয়ের অংশ হিসেবে সব ধরণের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন অনেকে। সুন্দর জীবনে হাঁটার আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু রক্তের সাথে মিশে যাওয়া মায়ের আদেশ পালন করতে সন্ধ্যা নামতেই বেপরোয়া হয়ে উঠতেন শ্যামলী। তাদের আস্তানায় আগত মাদকসেবী ও মাদক ক্রেতাদের সামাল দিতে কাজ করা ছিল তার মূল কাজ। কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে মার্শাল আর্টের ভাষায় প্রতিহত করা হতো। ভয়ঙ্কর পরিবেশ সৃষ্টি করাই ছিল তার মূল কাজ। কিন্তু এই শ্যামলীর শেষ রক্ষা হয়নি শেষ পর্যন্ত। মাদক বিক্রেতা ও চাঁদাবাজি মামলায় আসামি হয়ে শ্যামলী বসাক এখন পলাতক।

বেপরোয়া শ্যামলী বসাক ফেরারী জীবনের মধ্যেও গত ২৭ নভেম্বর দুপুরে প্রকাশ্যে এসে মামলার বাদি সাংবাদিক মুজিবুর রহমান ডালিমকে হুমকী দিয়ে বলেছেন তাদের মাদক কারবার বন্ধ করার ক্ষমতা কারো নেই। শ্যামলী বসাক অনেকটা বেপরোয়া হয়ে সাংবাদিক ডালিমকে জানায়‘ আমি যদি বলি আপনি আমাকে কুপ্রস্তাব দিয়েছিলেন, না মানায় মামলা করেছেন। তখন আপনার অবস্থা কী হবে।‘

২৬ নভেম্বর রাত আটটার দিকে শাহপরান আবাসিক এলাকার ৩ (৪) রোডে অবস্থিত সাংবাদিক মুজিবুর রহমান ডালিমের বাসায় মাদক ব্যবসায়ী ও চাঁদাবাজ চক্রের ১৫-২০ জন সদস্য হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর, লুটপাট করে। সুগা রানী বসাক ও রুনী তাতীর নেতৃত্বে ওই হামলায় শ্যমলী বসাকও অংশ নেন। একইদিন র‌্যাব-৯ এর একটি টিম অভিযান চালিয়ে শ্যামলী বসাকের পিতা কানাই বসাককে ২৫৫ লিটার মদসহ গ্রেফতার করে।


Comments are closed.




© All rights reserved © sylheteralo24.com
sylheteralo24.com