গোয়াইনঘাট সংবাদদাতা : সিলেটের গোয়াইনঘাটে যৌতুকের বলি একসন্তানের জননী গৃহবধূ সেলিনা বেগম। যৌতুক না পেয়ে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার আদালতে হত্যামামলা করা হয়েছে।
আদালত নালিশা মামলাটি দ্রুত ‘এফআইআর’ করতে থানা পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন। গত মঙ্গলবার সকাল ১০টায় থানার সুলতানপুর গ্রামে এ হত্যাকান্ড ঘটে।
জানা গেছে, সিলেটের গোয়াইনঘাট থানার পান্তমাই গ্রামের মৃত আব্দুল মালিকের মেয়ে সেলিনা বেগম(২২)। গত ২০১৫ সালের ৪মার্চ একই থানার সুলতানপুর গ্রামের মুহিবুর রহমানের পুত্র আল-আমিনের সাথে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর তার কোল জুড়ে আসে এক পুত্রসন্তান, যার বর্তমান বয়স ২বছর।
বিয়ের পর থেকে স্বামী ও শশুর পরিবার সেলিনার কাছে ৩ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে আসছিল। মাঝে মধ্যে পিত্রালয় হতে কিছু টাকাও এনে দিয়েছিল সেলিনা। কিন্তু স্বামী ও শশুর পক্ষ নাছোড় বান্দা । তারা ৩লাখ টাকা যৌতুক দাবিতে সেলিনাকে প্রায়ই মারপিট করতো।
একপর্যায়ে গত মঙ্গলবার সকালে স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন যৌতুক দাবিতে গৃহবধূ সেলিনাকে গলাটিপে হত্যা করে । হত্যার পর ঘটনাটি আত্মহত্যা কবলে চালিয়ে দেয়। পরে পুলিশকে ম্যানেজ করে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলাও রেকর্ড করিয়ে নেয় তারা।
কিন্তু সেলিনার পিতৃপরিবার তা মেনে নিতে না পারায় তারা থানায় গিয়ে হত্যামামলা করতে চাইলে মামলা নিতে অপারগতা প্রকাশ করে পুলিশ। ফলে বাধ্য হয়ে সেলিনার ভাই আব্দুল হামিদ বৃহস্পতিবার সিলেটের জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ১ম আদালতে ৮জনকে আসামী করে একটি নালিশা হত্যামামলা দায়ের করেন।
গ্রহণযোগ্যতা শুনানী শেষে আদালত নালিশা মামলাটি নিয়মিত হত্যামামলায় ‘এফআইআর’ করার নির্দেশ দেন।
মামলার আসামীরা হচ্ছে সিলেটের গোয়াইনঘাট থানার সুলতানপুর গ্রামের মুহিবুর রহমানের পুত্র ও সেলিনার স্বামী আল আমিন, সেলিনার শশুর মুহিবুর রহমান ও শাশুড়ী খয়রুন নেছা ,সেলিনার ননদ সামিয়া বেগম।
অন্য আসামীরা হচ্ছে একই থানার হাতিরখালের হারিছ উদ্দিনের স্ত্রী বেদেনা বেগম, রাজনগরের বাহার উদ্দিনের স্ত্রী রুবেনা বেগম ও রুবেনার স্বামী বাহার উদ্দিন।
আদালতের প্রসেস শাখা মামলা ও আদেশের সত্যতা নিশ্চিত করেছে।