গোয়াইনঘাট প্রতিনিধি : সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট থানায় অবশেষে গরুচুরের পক্ষেই মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। গরু চুরির ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রায় ২০ দিন পর অদৃশ্য শক্তির চাপে পড়ে চুরের পক্ষেই মামলা নিতে বাধ্য হয়েছে গোয়াইনঘাট থানার পুলিশ। এ ঘটনায় এলাকায় শুরু হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। জানা যায়, সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার গোয়াইন গ্রামের নুরুল ইসলাম নিজের এলাকা ছেড়ে বসত গড়েন উপজেলার উত্তর লাবু গ্রামে। তার ছেলে আব্দুল হান্নান (৩৫) একজন পেশাদার চুর। তার বিরুদ্ধে গোয়াইনঘাট থানার সরকারি গাড়ির ব্যটারি চুরি মামলা ও দক্ষিণ সুরমা থানায় মাদকের মামলা চলমান রয়েছে। এ অবস্থায় গত ৩০ মার্চ রাত অনুমান আড়াইটার দিকে একই গ্রামের দিনমজুর কৃষক নাজির উদ্দিনের বাড়ির গরুর গোয়াল ঘরে ৪টি গরু চুরি করতে ঘরের প্রবেশ করে গিয়ে হাতে নাতে ধরা পড়ে। চুরির ঘটনাটি গ্রামের মাইকে প্রচার হলে আশপাশের লোকজনসহ পার্শ্ববর্তী গ্রামের লোকজন ঝড়ো হলে। সকলের উপস্তিতিতে আব্দুল হান্নান নিজেই গরুচুরির বিষয়টি স্বীকার করলে উত্তেজিত জনতা তাকে গণধুলাই দিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান উপজেলা চেয়ারম্যানের মাধ্যেমে গোয়াইনঘাট থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। পুলিশ আহত অবস্থা গরুচুর আব্দুল হান্নানকে চিকিৎসার জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। উক্ত চুরির ঘটনায় নাজির আহমদ বাদি হয়ে গোয়াইনঘাট থানায় একটি চুরি মামলা দায়ের করেন। চুরির ঘটনার সত্যতা পেয়ে পুলিশ তার মামলাটি এফআইআর হিসাবে গণ্য করে। গোয়াইনঘাট থানার মামলা নং ৫ তাং ৮/৪/২০২০ ইং। উক্ত মামলাটি তদন্ত করছেন এস.আই শাহ আলম (নিরস্ত্র)। কিন্তু উক্ত চুরির ঘটনা আড়াল করতে গরুচুর আব্দুল হান্নানের পিতা নুরুল ইসলাম থানায় গিয়ে উল্টো নাজির আহমদসহ এলাকার নিরিহ লোকজনের নামে মামলা দায়ের করতে গেলে পুলিশ প্রথমে মামলা গ্রহণ করেনি। পরে হান্নানের পিতা নুরুল ইসলাম সিলেট পুলিশ সুপার বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ করেন মামলাটি গ্রহণের জন্য। শেষ পর্যন্ত থানার পুলিশ বাধ্য হয়ে চুরে পক্ষেই একটি কাউন্টার মামলা গ্রহণ করেন। যাহার মামলা নং-১২ তাং ২৮/৪/২০২০ ইং। কিন্তু উক্ত মামলার এজাহারে কোথায়ও চুরির বিষয়টি উল্লেখ করেনি পুলিশ। প্রকৃত বিষয়টি আড়াল করতেই নাজির আহমদের মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের এসআই শাহ আলম ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে এজাহারটি তৈরী করে দেন বলে গুঞ্জন শুনা যাচ্ছে।
এ দিকে এসপির কাছে দেওয়া গরুচুর হান্নানের পিতার অভিযোগের পর বিষয়টি তদন্ত করতে যান একজন এএসপি তিনি নাকি হান্নানের পিতার সহায় সম্পদ দেখে আব্দুল হান্নানকে চুর মানতে রাজি নন। আর পুলিশি খাতায় হান্নানের বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক চুরি আর মাদকের মামলা। গোয়াইনঘাট থানার মামলা নং ১২ তাং১০/০৮/২০১২ ইং ধারা ৩০৭/১১৪/৫০৬, সিলেট এসপির দক্ষিণ সুরমার থানার বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫/বি ধারায় মামলা নং ২২ তাং-২৮/৯/২০১৮ ইং। একই ভাবে হান্নানের চুরির সহযোগী তার চাচা বিরুদ্ধে গোয়াইনঘাট থানা রয়েছে গরু চুরির মামলা যাহার নং ৩৭ তাং৩০/৩/২০২০ চলমান। তাহলে কি করে সিলেটের সেই মানবতার ফেরিওয়ালা দাবীদার এসপি ফরিদ উদ্দিনের কাছে গরুচুর আব্দুল হান্নান ধোয়া তুলসি পাতা হয়ে গেলো। আর স্থানীয়দের অভিযোগ, আব্দুল হান্নানের পিতা নুরুল ইসলামের সহায় সম্পদ থাকলে তিনি তার ছেলেকে কোন রকম সহযোগীতা করেন না। তাই সে চুরিসহ ইন্ডিয়া থেকে মাদক এনে দেশে বিক্রি করে পরিবারের ভরণপোষণ করে থাকে।