সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা সীমান্তের মেঘালয় পাহাড় সংলগ্ন তাহিরপুর সীমান্ত লেক (চুনাপাথর খনিজ প্রকল্পের পরিতাক্ত খোয়ারী)টি আকর্ষনীয় হয়ে উঠেছে দিন দিন। নিজস্ব স্বকীয়তায় সবুজ বনানী,উচুঁ নিচু পাহাড়ী,টিলা ও মেঘালয় পাহাড় নিয়ে যেন এর সৌন্দর্য্য আরো আকষর্নীয় করে তুলছে পর্যটকদের কাছে। আর এর সৌন্দর্য্যে মুগ্ধ হয়ে এই লেকটির নাম ভিন্ন ভিন্ন ভাবে ফেইসবুক সহ বিভিন্ন মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় দেশ-বিদেশের পর্যটকদের কাছে দেখার আগ্রহ বাড়ছে। আর সেই লেক সম্পর্কে জানতে ও সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে ছুটে আসছে হাজার হাজার দর্শনাথী প্রতিদিন। তবে এই লেকের নাম নিয়ে এখনো অনেকের মাঝে বিভ্রান্তি রয়েছে।
এখানে এসে তারা কেউ বলছে নিলাদ্রী লেক, কেউ বলছে বাংলার কাশ্মির আবার কেউ বলছে তাহিরপুর সীমান্ত লেক আর স্থানীয়রা বলছে পাথর কোয়ারী। কিন্তু এই পাথর কোয়ারীটি অফিস আদালত সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন স্থানে ও স্থানীয় লোকজন সহ সবাই জানে ও চিনে ট্যাকেরঘাট চুনাপাথর খনিজ প্রকল্পের পরিতাক্ত পাথর খোয়ারী হিসাবে। টাংগুয়ার হাওর,বারেকটিলা,যাদুকাটা নদী সহ উপজেলার বিভিন দর্শনীয় পর্যটন স্পট দেখার পাশা পাশি মেঘালয় পাহাড় সংলগ্ন এই লেকটি দেখতে হাজার হাজার লোকজন আসছে সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে।
জানাযায়, এই লেকটি উপজেলার সীমান্তবর্তী উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের ট্যাকেরঘাটে মেঘালয় পাহাড় সংলগ্ন স্থানে অবস্থিত। সীমান্তবর্তী ট্যাকেরঘাট চুনাপাথর খনিজ প্রকল্পের পরিতাক্ত এই খোয়ারীটি ১৯৪০সালে চুনাপাথর সংগ্রহ শুরু করে। এখানে চুনাপাথর সংগ্রহ করে সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলায় নির্মিত আসাম বাংলা সিমেন্ট ফ্যাক্টরিতে পাঠিয়ে প্রয়োজনীয় চাহিদা মিটানো হত। ১৯৪৭সালে দেশ ভাগের পর বিভিন্ন সমস্যা ও ব্যায় বৃদ্ধি দেখিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয় এর সকল কার্যক্রম। পরে ১৯৬০সালে সিমেন্ট ফ্যাক্টরী চালু রাখার জন্য চুনা পাথরের প্রয়োজনে ভূমি জরিপ চালিয়ে সীমান্তবর্তী ট্যাকেরঘাট এলাকায় ৩২৭একর জায়গায় চুনাপাথরের সন্ধান পায় বিসিআইসি কর্তৃপক্ষ। পরবর্তী সময়ে ১৯৬৬সালে খনিজ পাথর প্রকল্পটি মাইনিংয়ের মাধ্যমে র্দীঘদিন পাথর উত্তোলন করে। পরবর্তীতে ১৯৯৬সালে এই প্রকল্পটি একটি লোকশানি প্রতিষ্টান হিসাবে প্রতিষ্টিত করে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ কোয়ারী থেকে চুনাপাথর উত্তোলন বন্ধ করে দেয়। এর পর এই গভীর কোয়ারীতে পানি জমতে থাকে একময় কানায় কানায় পরিপূর্ন হয়ে উঠে এই কোয়ারীটি।
তবে দৃষ্টি নন্দন এই লেকটি (চুনাপাথর পরিতাক্ত কোয়ারী) সীমান্ত ঘেষা পাহাড় ও হাওর সংলগ্ন সৌন্দর্য্যে পরিপূর্ন হওয়ায় প্রচুর পরিমান পর্যটকদের আগমন গঠছে প্রতিদিন।
যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত না থাকায় পর্যটকদের কাছে এর নিজস্ব সুন্দর্য অধরাই রয়েই যাচ্ছে। স্থানীয় এলাকাবাসী ও পর্যটকগন বলেন,মেঘালয় পাহাড় ঘের্রা এই সুন্দর্য সমৃদ্ধ স্থানটি সুন্দর্যে আমরা মুগ্ধ। এই সুন্দর্য সমৃদ্ধ লেকটির নিজস্ব গুন আছে যার জন্য সবাই চুনাপাথর কোয়ারী এক নামেই চিনত এখনও চিনে। সেই গুনের সাথে মিল রেখে ও এলাকার পরিচিতির স্বার্থে একটি সুন্দর নাম রাখলে ভাল হয়। সবাই সবার মত করে নিজেদের মন গড়া নাম প্রকাশ করায় এর নামের বিভ্রাট হচ্ছে। আর অনেক পর্যটকগন এখানে আসতে চাইলে নামের কারনে স্থানীয় লোকজন সহ সবাই লেকটির নাম বা স্থানটি বলে দিতে পারে না। আর বর্ষায় নৌকা ও শুষ্ক মৌসুমে মটর সাইকেল চালকরা নামের বিভ্রান্তির শিকার হয় তেমনি পর্যটকরাও বিভ্রান্তির মধ্যে পড়ে। সীমান্ত সংলগ্ন হওয়ায় আর এখানে একটি চুনাপাথর কোয়ারী থাকায় এর নাম তাহিরপুর সীমান্ত পাথর কোয়ারী লেক অথবা তাহিরপুর সীমান্ত লেক রাখলে এলাকার যেমন পরিচিতি পাবে তেমনি সবার কাছে বুজতে ও গ্রহন যোগ্য হবে।
তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুল জানান,চুনাপাথর কোয়ারীটি সবাই এক নামে চেনে চুনাপাথর কোয়রী হিসাবে আর নাম বিভ্রাটের কারনে পর্যটকগন চিনেন কেউ নিলাদ্রী লেক,কেউ বা বাংলার কাশ্মির সহ একাধিক নামে। সব কিছুর পরেও শুরুটাই সবাই মনে রাখে আর ভবিষ্যত্বেও রাখবে পাথর কোয়ারী হিসাবেই।