কারিমুল হাসান লিখন : সুন্দর সুযলা সুফলা শষ্য শ্যামলা আমাদের এই বাংলাদেশ। প্রকৃতির আঁচরে আঁকা বাংলাদেশের বগুড়া জেলার দর্শনীয় স্থান তথা পর্যটন স্পট। বাংলাদেশের দর্শনীয় স্থানসমুহের মধ্যে উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার সার্কের রাজধানী ক্ষাত বগুড়া জেলা পর্যটন এলাকা হিসেবে ব্যাপক পরিচিত। সম্প্রতি ২০১৬ সালে বগুড়ার ট্যুরিষ্ট ক্লাব বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা নানা প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ও সম্ভাব্য পর্যটন স্পট চিহ্নিত করে। এসকল সম্ভাব্য পর্যটন স্পটে পর্যটকের তেমন আসা যাওয়া লক্ষ করা যায়না। বগুড়া জেলার প্রত্যেক উপজেলাতে কোন না কো সম্ভাব্য পর্যটন স্পট লক্ষ করা যায়। যা কখনো দেশ ও দেশের মানুষের তথা পর্যটন প্রেমীদের নজরে আসেনি। বগুড়ার শুধু মাত্র কয়েকটি স্থান ছাড়া সবই অজানা। বগুড়ার মহাস্থানগড়, নবাববাড়ি, গোকুলের মেধ বা বেহুলা লক্ষিন্দারের বাসর ঘর, ভাসুবিহার, মহাস্থান যাদুঘর, বগুড়ার শেরপুরে মোঘল আমলে নির্মিত খেরুয়া মসজিদ, কয়েক’শ বছরের পুরানো রানী ভবানী মন্দির, সাউদিয়া পার্ক, মসল্লা গবেষণা কেন্দ্রসহ কয়েকটির নাম সবার জানা থাকলেও উল্লেখিত দর্শনীয় স্থানগুলোতে এখন দেশী-বিদেশী পর্যটক বা ভ্রমণ পিপাসুদের পদচারণা নেই বললেই চলে। যার মুল কারন হলো, পরিচিতির জন্য নেই ভালো প্রচারনা। প্রতিবছর ডিসেম্বর মাসে বগুড়াসহ উত্তরের জেলাগুলোতে পিকনিক আমেজ বয়ে যায়। বার্ষিক পরীক্ষা শেষে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো স্কুল, কলেজ ছাত্রদের নিয়ে শিক্ষা সফর করে থাকে। পাড়া মহল্লার তরুণ-যুবকরা দল বেঁধে বগুড়ার মহাস্থানগড়সহ আশপাশের দর্শনীয় স্থানগুলোতে ভ্রমণ করতে আসতো। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কর্মচারি, বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন, সামাজাকি সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোও ভ্রমণ করতো। কিন্তু বর্তমান সময়ে কয়েকটি পিকনিক বা শিক্ষা সফর ছাড়া তেমন কোন আনন্দময় পরিবেশ লক্ষ করা যায়না। দেশীয় এসব সংগঠনের পাশাপাশি বগুড়ায় মহাস্থানগড়, ভাসু বিহার, গোকুল মেধ বা বেহুলা লক্ষিণদার এর বাসর ঘর, বগুড়ার শেরপুরে সুপ্রাচিন রাণীভবানীর মন্দির, মোঘল আমলে নির্মিত (কথিত) খেরুয়া মসজিদসসহ আশপাশের দর্শনীয় স্থানগুলোতে বিদেশী পর্যটকও আসতো। বর্তমান সময়ে প্রচারনার অভাবে যেমন পর্যটকদের উপস্থিতি কমে গেছে তেমনি পর্যটন ও দর্শনীয়স্থানগুলোকে ঘিরে গড়ে ওঠা শতাধিক হোটেল মোটেল ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়িরা প্রতিনিয়ত লোকসান গুনছেন। যেখানে পর্যটন শিল্পকে কাজে লাগিয়ে দেশের অন্যান্য জেলা গুলো আর্থনৈতীক ভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশের বগুড়া জেলা অনেকাংশে পিছিয়ে রয়েছে। বগুড়ার পর্যটন প্রেমী ও ভ্রমন পিপাসুরা যদি স্ব স্ব অবস্থান থেকে নিজেদের এলাকার সম্ভাব্য পর্যটন স্পট গুলোর প্রচারনা ঘটায় তাহলে শুধু বগুড়া জেলা নয়, বগুড়ার প্রত্যেকটি উপজেলা এক একটি পর্যটন মিল্প হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব। চাই শুধু সৃজনশীল সুস্থ সংস্কৃতিক মানসিকতা ও দেশের জন্য কিছু করার প্রবল ইচ্ছা।
আসুন আমরা স্ব স্ব অবস্থান থেকে পর্যটন স্পট গুলোকে দেশ ও দেশের বাইরের মানুষদের কাছে তুলে ধরে বগুড়াকে একটি সমৃদ্ধশালী পর্যন নগরী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে, বেকারত্ব দুরীকরনসহ অর্থনৈতীক স্ববলম্বীতা অর্জন করি।
(কারিমুল হাসান লিখন)
পর্যটন প্রেমী